Bangla Translation Foundation
Bangla Translation Foundation

Talk With Us

0123456789

শব্দের জাদু– অনুবাদে ঠিক কতটা হারাই?

এ্যাডাম গুপনিক

অনুবাদক: রেশমী নন্দী 

Dictionary of Untranslatables: A Philosophical Lexicon বইটি মূলত ফরাসী ভাষায় লিখিত। পরে প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি প্রেস থেকে তিন গুণী ভাষাবিদের সম্পাদনায় ইংরেজীতে প্রকাশিত হয় বইটি। প্রায় ডজনখানেক ভাষার দর্শন, সাহিত্য এবং রাজনৈতিক ৪০০ শব্দের উপর নানা দিক থেকে আলোকপাত করে মূলের কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে বইটিতে। এই বই নিয়ে আলোচনার সূত্র ধরেই “দি নিউইয়র্কার” -এ এ্যাডাম গুপনিক এই লেখাটি লেখেন।

ইতালীতে একবার একটা রেষ্টুরেন্টে পরিবার নিয়ে খেতে গিয়েছিলাম। ঊনিশ শতকের লেখকের ভঙ্গীতে বললে বলতে হয়, সামান্য একটা ভুলেই আমি পারিবারিকভাবে বোকা উপাধি পেয়েছিলাম। ইতালীয় দুটি শব্দের সূক্ষ্ণ পার্থক্য না বুঝে এর ব্যবহারই এ দূর্ঘটনার কারণ। ডেজার্টে স্ট্রবেরী অর্ডার দিতে খুব কায়দা করে উচ্চারণ করতে চেয়েছিলাম “fragoline”। পরে দেখলাম, আসলে যা বলেছি তা হলো “fagiolini” যার অর্থ হলো মটরশুটি। ফলে বাচ্চাদের জন্য পেস্ট্রি আর আইসক্রিমের সাথে বেশ সাড়ম্বরে আমার ডেজার্ট হিসেবে এসেছিল কফি আর মটরশুটি। কয়েক মুহূর্তের মধ্যে আমার বাচ্চাদের যে হাসি শুরু হয়েছিল, সেটা এখনো মাঝে মাঝে নানা কারণে উসকে উঠে। একটা অক্ষর “r” সেদিন যে কারণে ইতালীয় ঐ রেষ্টুরেন্টে একটা পরিবারে একজনকে বোকা বলে চিনিয়ে দিল, তা হলো ভাষার নিজস্ব খামখেয়ালীপনা। যদিও কথা বলা এখন নিঃশ্বাস নেয়ার মতোই স্বাভাবিক ঘটনা, কিন্তু সত্য হলো এই যে শব্দগুলো আসলে খুব অদ্ভুত, বিমূর্ত একধরনের প্রতীক- মিশরীয় চিত্রলিপির মতোই দুর্বোধ্য, মিশরীয় সমাধির মতোই যে কাউকে ঘোল খাইয়ে দিতে পারে।

যদিও একটা নির্দিষ্ট ভাষায় স্ট্রবেরী আর মটরশুটি বুঝাতে কাছাকাছি ধরনের শব্দ ব্যবহৃত হয়, কিন্তু বড় পরিসরে ভাবলে, পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষাতেই এরকম কাছাকাছি ধরনের শব্দ বেশ গোলমাল পাকিয়ে তুলতে পারে। একইধরনের দুটি শব্দ পুরোপুরি ভিন্ন অর্থ বোঝাতে পারে। ইংরেজীতে “pious” মানে ধার্মিক ব্যক্তি বোঝায়, অন্যদিকে ফরাসী ভাষায় এর অর্থ রসবোধসম্পন্ন মানুষ। ফ্রান্সে ” liberal” বলতে বোঝায় ডানপন্থী, আমেরিকায় সেটা বামপন্থী। এমনকি সংষ্কৃতিগত কারণেও কি সাধারণভাবে একইরকম শব্দের ভিন্ন মানে দাঁড়ায় না? ফরাসী ভাষায় “savoir-faire” আর ইংরেজীর “know-how” শব্দের গঠন বিবেচনায় একই হলেও একই ধরণের অর্থ কি বোঝায়?

শব্দ আর শব্দাংশে লুকিয়ে থাকা এসব ফাঁদ নিয়েই “Dictionary of Untranslatables: A Philosophical Lexicon,” নামের একটি বই প্রকাশিত হয়েছে যেটাকে হয়তো একবিংশ শতকের সবচেয়ে বিচিত্র বই আখ্যা দেয়া যায়। ১৩শ পৃষ্ঠার এই বইটি মূলতঃ সম্পাদনা করেছে ফরাসী ভাষাবিজ্ঞানী বারবারা কেসিন। পরে প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি প্রেস থেকে বইটি প্রকাশিত হয় বেশ কিছুটা পরিবর্তন করে। তুলনামূলক সাহিত্যের তিন দিকপাল এমিলি এপটার, জ্যাকুস লেজরা এবং মাইকেল উড ইংরেজী ভাষার উপযোগী করে বেশ কিছুটা পরিবর্তন আনে বইটিতে। বইটা কতটা অদ্ভুত সেটা নানাভাবে বোঝানো যায়। এটা অংশতঃ এ যুগের আধিপত্যবিস্তারকারী ইংরেজী ভাষার বিরুদ্ধে লেখা একটা বই যেটা সবার কাছে পৌঁছানোর জন্য ইংরেজীতেই প্রকাশ করা হয়েছে। বইটাতে ধরে নেয়া হয়েছে যে পৃথিবীতে অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ, উল্লেখযোগ্য এবং অ-অনুবাদযোগ্য শব্দ রয়েছে। যেমন ইংরেজী “history”, ফরাসী “histoire” আর জার্মান “Geschichte”- শব্দ তিনটির বিস্তার বেশ কিছুটা ভিন্ন এবং সেটা বুঝতে হলে শব্দগুলোর প্রায়োগিক বাক্যও বুঝতে হবে। সম্পাদকদের বিশ্বাসও তাই। অভিধানে অ-অনুবাদযোগ্য হিসেবে স্থান পেলেও সেখানে ইংরেজীতে বেশ স্পষ্ট করে প্রত্যেকটি শব্দের পার্থক্য চিহ্নিত ও ব্যাখ্যা করা হয়েছে- যদিও অর্থ পরিষ্কার করতে একটি শব্দের জন্য অনেক বাক্যের অবতারণা করতে হয়েছে সেখানে।

ফরাসী ভাষার “Histoire” মানে গল্প আর ইতিহাসের সংমিশ্রণ বোঝালেও ইংরেজীতে কেবলই ইতিহাস। ফলে, গল্প আর ইতিহাসের সংমিশ্রণ বোঝাতে ফরাসীদের সুন্দর একটা শব্দ আছে। কিন্তু ইংরেজীতে কেউই এ বিষয় নিয়ে মাথা ঘামায় না যে ইতিহাস মানে ঘটনাপঞ্জি ও আখ্যানের মিশ্রণ। বইটির মুখবন্ধে সম্পাদকরা যথার্থই ঘোষণা করেছেন যে, বইটিকে কেউ কোন বিশ্বাসের ভিত বানিয়ে ফেললে তা ভুল হবে: “ কাছাকাছি ধরনের প্রতিশব্দ বেশিরভাগ সময়েই থাকে। . . . যদি শব্দগুলো বিভিন্ন ভাষায় হুবহু একই ধরনের অর্থ বহন করতো তবে তা অনুবাদ না হয়ে প্রতিলিপি হয়ে যেতো।. . . . অনুবাদে যেটুকু ক্ষতি হয়, শেষ পর্যন্ত তা পুষিয়ে নেয়া খুব সোজা।” অর্থাৎ বইটা নিজেই নিজের ধারণাকে উড়িয়ে দিচ্ছে, অনেকটা জঁ তাঁগলি সেই সৃষ্টির মতো যার উদ্দেশ্যই ছিলো এর আত্ন-ধ্বংস সবাইকে দেখানো।

তারপরেও তাঁগলি যেমন একজন গুরুত্বপূর্ণ এবং উপভোগ্য শিল্পী, বইটিও তেমন- বিদঘুটে সব শব্দ চমৎকারভাবে, কখনো বেশ গুরুগম্ভীরভাবে, ব্যাখ্যা করা হয়েছে এতে। যদিও অভিধানের বেশিরভাগ শব্দ ইংরেজী, জার্মান, ফরাসী আর ইটালীয়ান, রোমানিয়ান “dor” এর মতো শব্দ নিয়েও এখানে আলোচনা হয়েছে। “dor” শব্দটি দিয়ে বোঝায় কিছুর অাকাঙ্খা, কিন্তু আত্মসচেতন রোমানিয়ানদের কাছে এ যেন আরো বেশি কিছু – লোকজ সংষ্কৃতি আর দর্শন মিলিয়ে এ যেন সীমাবদ্ধতার এক গীতিময় প্রকাশ। “dolus” থেকে উদ্ভুত এ শব্দ, ক্লাসিসিষ্ট আনকা ভাসিলিউ-এর মতে, বিষন্নতার চেয়েও যথাযথ আর অন্যরকম, “Weltschmerz” চেয়ে কম ভাবপ্রবণ ও সুখদায়ক। পাঠক হয়তো ফরাসী-রোমানিয়ান বুদ্ধিজীবী এমিল সিওরেন আর রোমানিয়ান-মার্কিন শিল্পী সল স্টেইনবার্গকে উদাহরণ হিসেবে নিলে আরো ভালভাবে শব্দটার অর্থ বুঝতে পারবেন।

ফ্রয়েডের ” Trieb” যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ইংরেজীতে “drive” হিসেবে অনুদিত হয়, সেটা নিয়েই চমৎকার এক আলোচনা আছে বইটাতে। সেখানে বলা হয়েছে, ” Trieb” এর ধারণাটি “instinct”-এর অনেক কাছাকাছি যদিও মার্কিনীরা “drive” শব্দটির বহুল ব্যবহার করে ফ্রয়েডিয়ানিজমকেই মূল থেকে দূরে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। “logos” যেটা কিং জেমসের গসপেল অব জন-এ অনুবাদে এসেছে “the word,” হিসেবে, এই অভিধানে সেই “logos”-এরই ২৩টি আলাদা আলাদা অর্থ দেখানো হয়েছে এবং তাও কেবল ইংরেজী ভাষাতেই। সম্পাদকরা বলছেন, অসংখ্য অর্থসম্বলিত শব্দের সার্থক উদাহরণ এই “logos”। “piety” আর “pity” শব্দদুটোর পার্থক্য বোঝাতেও এই অভিধানে অনেকটুকু জায়গা বরাদ্দ দিতে হয়েছে- আধুনিক মানবতাবাদীদের একটি অর্থে পৌঁছানোর তাগিদ পাঠকদের বুঝতে সাহায্য করবে খ্রীষ্ট বিশ্বাসীদের নৈতিক দায়িত্ব আর নৈতিক প্রবৃত্তিতে পার্থক্যের জের ধরে।

আশ্চর্যজনকভাবে, কিছু কিছু শব্দ এসেছে নির্ধারিত কয়েকজন লেখকের হাত ধরে। “Spleen” শব্দটা শেকসপিয়ার আর বোদলেয়ারের আশ্চর্য সংযোগ। পৌরুষের দুর্দন্ড প্রতাপ বোঝাতে প্রাচীন চিকিৎসাশাস্ত্র থেকে শেকসপিয়ার শব্দটিকে তুলে আনেন। প্রায় তিন শতক পরে, বিষাদগ্রস্ততার উপদ্রব বোঝাতে গিয়ে শব্দটির পূর্ণজন্ম হয় বোদলেয়ারের হাতে। ইতালীয় “Sprezzatura”-কে উল্লেখ করা হয়েছে অ-অনুবাদযোগ্য শব্দের মধ্যে নিজ যোগ্যতায় অনন্য হিসেবে। শব্দটার সচেতন উৎপত্তি ঘটিয়েছিলেন ষোড়শ শতকের ইতালীয় লেখক বালদাসারে কাস্তিলিওন – নিজের অদ্বিতীয় ধারণা “পোলিশদের কাছে ভদ্রলোক মাত্রই ভাবলেশহীন” বোঝাতে, অনেকটা লুইস ক্যারোলের “mome raths”-এর মতো।

ধোঁয়াশা থেকেও বেরিয়ে আসতে পারে সুনির্দিষ্ট ধরন। কিছু শব্দের বদল ঘটেছে সময়ের ফেরে, কিছু বদলেছে রাজনৈতিক ইতিহাসের ঘটনাক্রমে। আগের উদাহরণে যেমনটা দেখা যায়, যে যদিও “spirituel” শব্দটি “witty” বোঝাচ্ছে, আসল কথা তো হলো, এটা আসলে একধরনের বুৎপত্তিগত দুর্ঘটনা। “spirited” শব্দটাও এরকম। শেকসপিয়ার এন্টনি সম্পর্কে “quick spirit,” ব্যবহার করে বুদ্ধিদীপ্ততাকে ইঙ্গিত করেন, তাঁর ভালোত্বকে নয়।

অন্যদিকে, ফরাসী “liberal”, ইংরেজী “liberal” থেকে আলাদা। ফরাসী লিবারেলরা মার্গারেট থ্যাচারের মতো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের ভক্ত, যিনি কল্যাণ রাষ্ট্রের ধারণার চেয়ে বেশি সমর্থন করে মুক্ত বাজারকে। অন্য একটি কারণেও পার্থক্যটা বেশ ঐতিহাসিক। ফ্রান্সে শুরুর দিককার পরিবর্তনের হাত ধরে মুক্তির কথা মানেই এখানে দেশের বিরুদ্ধে কথা বলা। অন্যদিকে, আমেরিকাতে, নাগরিক অধিকার আন্দোলনের হাত ধরেই মুক্তির কথা মানে দেশের জন্য কথা বলা। যদিও ফ্রান্স ও আমেরিকাতে মুক্তির নামে মানুষ একই কথায় বলেন, তারপরেও ফ্রান্সে তা ডানঘেঁষা হয়ে যায়, কারণ দেশটি বেশ তেরছাভাবে বামপন্থায় মোড় নিয়েছে।

এত সব শব্দের ভিতর, জার্মান শব্দ “Dasein,” সম্পাদকদের সত্যিকার অর্থেই বেশ ঝামেলায় ফেলে দিয়েছে। শব্দটা হেইড়েগারের Being and Time, এর মাধ্যমে বেশ প্রসিদ্ধি লাভ করে। এটা এমন একটা শব্দ যা জার্মান ভাষার অনুবাদকদেরও বেশ হতবম্ব করে তোলে, যেমনটি হয়েছে সম্পাদকদের ক্ষেত্রেও। অ-অনুবাদযোগ্য শব্দের উৎকৃষ্ট উদাহরণ এই শব্দটার ভাবার্থ বোঝাতে বইটিতে দুই কলামের ছয় পৃষ্ঠা খরচ করতে হয়েছে। সাধারণভাবে বোঝাতে গেলে এর অর্থ “life,”, কিন্তু তার সাথে যোগ করা হয়েছে বেশ খানিকটা আকুলতা। ( আমাদের অস্তিত্বের যেটুকু আসলে আমরা, দরকারী হোক বা অদরকারী, কেবলমাত্র ব্যক্তি পরিচয়ের বোধ থেকে নয়, বরং আমাদের সত্ত্বার যেটুকু আমাদের হয়ে উঠতে হচ্ছে)। “Dasein” নিয়ে এ ব্যাখ্যা আমাদের জানায় যে এমনকি এর মূল ভাষায়ও অন্য কোন একটি শব্দ দিয়ে একে বোঝানো যাবে না।

বেনজামিন লি ওর্ফের ভাষাতত্ত্বের, যা তাঁর নিজ নামেই প্রসিদ্ধ, আপেক্ষিকতার দেখা মিলবে এ অভিধানে। শখের মার্কিন এ ভাষাবিদ বিংশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে উত্তরপূর্ব আরিজোনার হপি ভাষায় ( Hopi language) ক্রীড়া পদের ব্যবহার নিয়ে বেশ কৌতূহলী হয়ে ওঠেন। ওর্ফিনিজম (Whorfianism) আমাদের জানায় যে ভাষা আমাদের চারপাশের সবকিছুকে দেখার ভঙ্গীকে প্রভাবিত করে এবং ভিন্ন ভাষার মানুষ ভিন্ন ভিন্নভাবে বৈশ্বিক বিষয় দ্বারা প্রভাবিত হয়।

ভাবনাটা শুনতে খাঁটি মনে হলেও শক্ত অবস্থান থেকে বিচার করলে আপেক্ষিকতাবাদের এ ভিত্তি গায়েব হয়ে যাবে। মোটের উপর, আমরা তো আমাদের ভাষার বন্দী। তার তাই নিজ ভাষার দুর্বলতা স্পষ্ট করে দেখতে পাই না, এমনকি নিজের ভাষা দিয়ে প্রকাশযোগ্য নয়, এমন ভাবনাও ধারণ করতে পারি না। এই অভিধানের পাতায় পাতায় ওর্ফের ছায়া তাড়া করছে আর সম্পাদকরা চেষ্টা সত্ত্বেও ফিরে ফিরে আসছে এর কাছেই। যেমন, ইংরেজী “-ing,”-এর চেনা অর্থ অনুযায়ী ই পি থমসনের “The Making of the English Working Class” ফরাসী ভাষায় অনুদিত হয়ে দাঁড়াতে পারে
“The Formation of the English Working Class,”।

সাম্প্রতিককালে ওর্ফিয়ান ভাবনার কিছু নিরীহ সংষ্করনের দেখা মেলে। যেমন নীল রংয়ের আরো বেশ কিছু ধরন “aqua,” “teal,” and “periwinkle,” শব্দগুলো ব্যবহার দিয়ে নিশ্চিত করতে চাই যে আমরা নানা সুক্ষ্ণাতিসুক্ষ্ণ রং বুঝতে পারি। অন্য কথায় বললে, রংয়ের এ ধরনের সুক্ষ্ণ ধরন অনেক সহজে স্মৃতিতে গেঁথে যায়। যদিও এমন নয় যে আম জনতার চেয়ে আপনি বেশি সুক্ষ্ণভাবে রংয়ের পার্থক্য ধরতে পারছেন। এধরনের ধারণা কিছুটা পাওয়া যায় ওর্ফের তত্ত্বে।

ওর্ফিনিজমের সূত্র ধরে ভাষাবিদ জন এইচ ম্যাকওর্টর চমৎকার একটা বই লিখেছেন The Language Hoax। ছোট এই বইটিতে আরো একবার ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে, কেন ভাষাতত্ত্বে আপেক্ষিকতার বিষয়টি আসলে অসার। ম্যাকওর্টর বলেন, রংয়ের সুক্ষ্ণ তারতম্য প্রকাশে ব্যবহৃত শব্দগুলো যে মাইক্রোসেকেন্ড বাঁচিয়ে দেয় তা আসলে “trattoria” শুনে বাচ্চাদের হাসি শুরু করতে যেটুকু সময় লাগে, তার চেয়ে কম। এটা এখন আর অবাক হওয়ার মতো কিছু নয় যে, যেসব আদিবাসীদের ভাষায় সংখ্যা নেই, তারা অংক কষতে পারে না, যেমনটা গাড়ি না থাকলে কেউ গাড়ি চালাতে পারে না। তিনি আরো একটি সমস্যার গোড়ায় আঘাত করেন: “বাস্তবিকভাবে আলাদা ধরনের একটা দৃষ্টিভঙ্গী হয়ে উঠতে হলে একটি নির্দিষ্ট মাত্রার চিন্তার পার্থক্য হতে হয়।” এমনকি এটা যদি সত্যিও হয় যে ইংরেজিতে “পার্টিসিপেল” আমাদের চিন্তা করার সামান্য হলেও সম্ভাবনা তৈরি করে, মতাদর্শ ও বিশ্বাসের ভিন্নতা সেই পার্থক্যকে ভাসিয়ে নিশ্চিহ্ন করে দেয়।

ম্যাকওর্ট বেশ কিছু তর্কের অবতারণা করে সেগুলোর ব্যাখ্যা করেছেন। কিন্তু এরপরও ভূতের মতোই চিরায়ত কিছু বিষয় আমাদের তাড়া করে ফেরে। ভাষাতত্ত্বের আপেক্ষিকতা তাহলে কেন লোভনীয়? আমরা হয়তো একধরনের সান্তনা পেতে পারি যে আমরা নিয়ন্ত্রণের বাইরে কিছু আমাদের আবদ্ধ করে রেখেছে- হোক সেটা ভাষা কিংবা ভবিতব্য, ঈশ্বর কিংবা অর্থ- এবং এর ফলে দায়িত্ব থেকে নিষ্কৃতি পেয়ে স্বস্তি পেতে পারি। এমনও হয় যে ভাষাতত্ত্বের আপেক্ষিক এ ব্যবহার আমাদের একধরনের বোদ্ধা করে তোলে, যার ফলে আমরা মনে করি যে মানুষ ভাষার নিগরে বন্দী এবং আমরাই সেই জ্ঞানী যারা সেটা অন্যদের জানাতে পারি। কিন্তু সত্যি হলো এই যে ভাষা কারাগারের অন্ধকূপ নয়, এটা বন্দী দশা থেকে পালিয়ে যাওয়ার অস্ত্র- হয়তো কোন কোনটাতে জং ধরেছে, কোন কোনটা ব্যবহার করে যে কোন দরজাই খোলা যায়, তবে, বেশিরভাগই রয়েছে যেগুলো দিয়ে চট করে তালাটা খোলা না গেলেও একটু চেষ্টা করলেই কাজ করে।
মজার বিষয় হলো , ম্যাকওর্টের এই ভাবনা জর্জ অরওয়েলের মতো বিদ্বৎসমাজে প্রভাব বিস্তারকারী লেখকের ভাবনাকে অপ্রাসঙ্গিক করে দিতে পারে। জর্জ অরওয়েল তাঁর ১৯৪৬ সালে লেখা “Politics and the English Language”-এ দাবি করেন, চিন্তার পতন থেকে ভাষার পতন আলাদা করা যায় না। যদিও বেশিরভাগ মানবতাবাদীর কাছেই অরওয়েলের ভাবনার সমালোচনা অনেকটা ক্যাথলিকদের কাছে সেইন্ট থমাস একুইনাসের সমালোচনার মতোই ঠেকবে, তবু এ প্রবন্ধ এমন কিছুকে বাতিল করেছে যার আসলে অস্তিত্বই নেই। এটা ঠিক যে অরওয়েল দুমুখো কথা, সস্তা স্বপ্ন কিংবা ইচ্ছাকৃত বিভ্রান্তি- যেমন “strategic hamlets” and “enhanced interrogation,”-এর মতো ভ্রান্তি সৃষ্টিকারী শব্দের বিরোধী ছিলেন, তবু ইউফোমিজম বা তেতো কিছুর মিষ্টি নাম আসলে বুদ্ধিবৃত্তিক নয়, নৈতিক সমস্যা। যখন মার্কিন রাজনীতিবিদ ডিক চেনি “torture” শব্দটিকে “enhanced interrogation,” বলেন, এর মানে এ নয় যে অত্যাচার কোন ভিন্ন রূপ পাচ্ছে আমাদের কাছে। বরঞ্চ এধরনের শব্দচয়ন তাদের জন্য, যারা জানেন তারা কিছু একটা ভুল করছেন এবং ভুলকে ভুলে থাকতেই এধরনের শব্দের উৎপত্তি ঘটে। যদি ভাষার আপেক্ষিকতা সত্যি হতো, তাহলে ঠিকঠাক শব্দ বা বাক্যাংশের ব্যবহার না করলে আমাদের উপলব্ধিতে তারতম্য ঘটতো। “অত্যাচার”কে যে নামেই চেনি অভিহিত করুক না কেন, তিনি নিজেও জানেন ব্যাপারটা আসলে কি। উপরন্তু, যেহেতু আমরা খুব ভালোভাবেই জানি যে কি দিয়ে আসলে কি বোঝানো হচ্ছে, এ ধরনের আজগুবি মিষ্টি শব্দ একধরনের অপরাধ হিসেবেই গণ্য হয়।

নৈতিকতার প্রশ্নে সরস রচনা মানে প্রচন্ড শ্রম, তীব্র প্রচেষ্টা আর প্রয়োজনীয় নৈপুণ্যের সমাহার- ভয় না ধরিয়ে দিয়ে সহজে যোগাযোগের ইচ্ছা, পাঠককে জ্বালাতন না করে তার সাথে সৌহার্দ্য বজায় রাখার চেষ্টা। স্বাভাবিক সুসামঞ্জস্যপূর্ণ বাক্য এর নিজ গুণেই অসাধারণ। তবে, এমন নিশ্চয়তা দেয়া যায় না যে এগুলো সত্যি কথা। এমন অনেক সুগঠিত বাক্য আছে যেগুলো মুর্খামির চূড়ান্ত। তবে, চারপাশের অন্যসব ছাঁচে ঢালা মানুষ কিংবা বাড়িঘরের মতোই এসব বাক্যও দেখতে বেশ চমৎকার হয়।

বিভিন্ন ভাষার সুক্ষ্ণাতিসুক্ষ্ণ বৈশিষ্ট্যগত পার্থক্যই এর মধ্যে শৈল্পিক দ্যোতনা তৈরি করে। উদাহরণ হিসেবে ধরা যায় ফরাসী চলচ্চিত্র “Le Jour Se Lève,” -র একটি দৃশ্যে একজন হত্যাকারীর ঘরের একটি আসবাব প্রসঙ্গে সেখানকার দারোয়ান পুলিশকে জানায়, “une armoire comme toutes les armoires”, ভাবানুবাদে যা প্রকাশ করলে ইংরেজীতে যা দাঁড়ায় তা হলো “An armoire like all armoires.” অথচ চলচ্চিত্রের সাবটাইটেল দেখা যাবে, “It’s just a regular armoire.” অর্থাৎ অনুবাদে ফরাসী ভাষায় সে দেশের নিজস্ব ভঙ্গি ধরা না পড়েও মোটের উপর বিষয়টা বোঝানো গেলো।

সমাজ বিজ্ঞানের সমীক্ষাও এটা বলে যে ধারণাগত পার্থক্যের চেয়েও সংষ্কৃতিগত পার্থক্যই ভাষার ব্যবহারে বেশি ধরা পড়ে। বেশিরভাগ দোভাষীই যখন অন্য ভাষায় ভাব প্রকাশ করে তখন বেশ অনেকটা আলাদা হয়ে যায় তা। যেমন আমেরিকায় রাশিয়ানরা নিজেদের ক্ষেত্রে যৌথ বিশেষ্যের ব্যবহার বেশি করলেও ইংরেজীতে ব্যক্তিকেন্দ্রিক বিশেষ্যই বেশি প্রাধান্য পায়। ফরাসী ও ইংরেজী ভাষায় দক্ষ দোভাষীদের একই গল্প ইংরেজীতে বলার সময় কোন ঘটনার উল্লেখে “জয়”-এর উপর জোর দিলেও ফরাসী ভাষায় হয়তো তা হয়ে যায় “আক্রমণ করে জেতা”-র উপর। অনেকটাই “সকার” যারা খেলে তাদের অভ্যাস কিংবা ভঙ্গী কিছুটা আলাদা হয় “হকি” খেলোয়ারদের তুলনায়। দ্বিধাহীনভাবেই, ভিন দেশে বসবাসকারীরা নিজেদের মধ্যে নানা অভ্যাস বয়ে বেড়ান, যা সমাজ বাস্তবতার নিরীখেই নতুন ভাষায় কথা বলার উপর প্রভাব ফেলে। ফরাসী কিংবা ইটালিয়ান ভাষা জেনেও সেখানকার অধিবাসীদের বাচনভঙ্গি না জানলে, কথা বলা সম্ভব নয়।

আমরা ভাষার বন্দী নয়, কিন্তু নির্দিষ্ট একটি ভাষায় আমরা বাস করি। এবং এই নাগরিকত্ব মানে নানা আচার ও আচরণের বৃহৎ পরিসর। ভিন্ন ভাষায় মানিয়ে নিতে গিয়ে প্রথম ধাক্কায় এর গোপণ অস্তিত্বের সাথে একধরনের গলাগলির সম্পর্ক গড়ে ওঠে আমাদের, যেটা সম্পর্ক ঘনিষ্ট হতে হতে ততটা থাকে না। নতুন ভাষা শেখা মানে নতুন একটা শহরকে জানা, এমন কিছু নজরে আনা যা আগে কখনো নজর কাড়েনি। তবে, যখন এ ভাষাতেই বাস করতে শুরু করবে কেউ, তখন অনেক কিছুই তার পরিণত হবে অভ্যস্ততায়। এমনকি এমনও হতে পারে যে বিদেশী ভাষায় কথা বলতে অভ্যস্ত হয়ে যাওয়ার আগেই বরঞ্চ এ ভাষায় “ভাবা”টা অনেক সহজ। ফরাসী ভাষায় বস্তুকে যেভাবে লৈঙ্গিক পরিচয় দেয়া হয় যেমন টেবিল স্ত্রীলিঙ্গ, মোমবাতি পুংলিঙ্গ, প্রথম প্রথম বেশ অদ্ভুত লাগলেও পরে স্বাভাবিকই মনে হয়। ( আমরা যেমন ইংরেজী ভাষার অদ্ভুত অনেক কিছু খেয়াল করি না। উদাহরণ হিসেবে ধরা যায়, ভবিষ্যতের কোন কথা বলতে হলে ‘will’ যোগ করে সেটা করতে হয়।)

যত শক্তভাবেই ওর্ফনিজমের বিপক্ষে অবস্থান নেয় না কেন, কোন জার্মান ভাষী যখন দুঃখ করে বলেন, যে রিলকে-কে আমরা পড়ি, তা আসল রিলকে-র ধারে কাছেও নেই, বিষয়টা আমরা বুঝে যাই, কারণ জার্মানভাষীরাও প্রকৃত “কিটস”-কে পায় না, তা আমরা জানি। (“Schönheit ist Wahrheit, Wahrheit Schönheit” এর ইংরেজী অনুবাদ যখন দাঁড়ায় “Beauty is truth, truth beauty”, ভাষার যথার্থ কেরামতির অভাবে সেখান থেকে সৌন্দর্য অনেকটাই হারিয়ে যায়।)

সাম্প্রতিককালে ছোটখাট বিচ্যুতি বাদ দিলে অসাধারণ কিছু অনুবাদের কাজ হয়েছে। যেমন জন ফ্লোরিও-র অনুবাদে মিশেল দো মোঁতাইগ-এর প্রবন্ধের নতুন সংস্করণ। এর অনেক ভালো অনুবাদ থাকলেও এ বইটি যেন একেবারে মূলের সঠিক অনুরনন- যথার্থস্থানে আলোকপাত স্পষ্ট ছবি তুলে ধরে পাঠকের কাছে। ফ্লোরিও-র “মোঁতাইগ”-এ পাওয়া যায় শেকসপিয়ারের স্পস্টতা এবং অভিনবত্বে।

একই কথা খাটে ফরাসী লেখক মার্সেল প্রুস্ত অনুবাদের ক্ষেত্রেও, যদিও খারাপ অনুবাদের জন্য অনুবাদক সি কে স্কট মনক্রিফ ক্ষমা চেয়েছিলেন পাঠকের কাছে। কথিত আছে যে মনক্রিফের স্বভাবসুলভ কবিত্ববোধ প্রুস্তের চেয়ে বেশি বই কম নয় এবং সেই মজ্জাগত অনুভব তাঁর অনুবাদগ্রন্থকে দিয়েছে অনবদ্যতা। অবশ্য এই কাব্যভাবের কৃতিত্ব অনেকটাই দেয়া যায় কবিত্ব প্রকাশে ইংরেজী ভাষার সহজাত সুযোগ। যদিও কিছু কিছু ক্ষেত্রে যথাযথ প্রকাশ অধরাই রয়ে গেছে। ( যেমন “Swann in Love,”-এ নায়ক যখন তীব্র হতাশা, শূন্যতা বোধ থেকে জানান দিতে চায় যে, যার জন্য এত ত্যাগ, সে আসলে শেষ পর্যন্ত তার মনের মতো কেউ নয়, সেই তীব্র ভাঙ্গচুরের অনুভবের বিপরীতে মনক্রিফ লেখেন “not my style.”)। অবশ্য তারপরও এ অনুবাদের ছন্দ আর বইয়ের বেগুণী রং- সবকিছু মিলিয়ে পরের অনুবাদগুলো এই বইটাকে ছাড়িয়ে যেতে পারেনি। ফরাসী শব্দের যথার্থ অনুরনণ ইংরেজীতে খুঁজে বের করেছেন মনক্রিফই।

২০১১ সালে অনুবাদের উপর লেখা Is That a Fish in Your Ear?-এ ডেভিড বেলোস বলেছেন, যদিও অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে যেখানে অনুবাদে মূল লেখার অনেকটাই হারিয়ে গেছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমরা দ্বিধাহীনভাবে সবকিছু অনুবাদ করে ফেলি। তিনি লিখেছেন “কোন বড় কবির কথা মনে আনুন, এর অনুবাদকের কথা মনে আসবে”। ভাষার নির্দিষ্ট কোন মাপকাঠি না থাকায় আমরা প্রায়ই একভাষা থেকে অন্যভাষায় কবিতা অনুবাদ করি। এটাকে একধরনের জয় হিসেবে দেখলেও অন্য কোন দিক থেকে কি একে ভাবা যায়? হয়তো এটাই সত্যি যে আমরা যেমনটা ভাবি কবিতা আসলে ততটা কাব্যময় নয়, যেমনভাবে দর্শনের যে কাব্যভাব সেটা দার্শনিকের ভাবনার চাইতেও অনেক বড়। কবিতার মধ্যে শব্দের জাদুর পাশাপাশি থাকে জ্ঞানের আধার আর তাই ইংরেজী আর পোলিশ ভাষায় সিম্বোর্সকা যতই আলাদা হোন না কেন, শব্দচয়নের মোহময়তা ছাড়াও সৎ পরামর্শের জন্য তাঁর দ্বারস্থ হই আমরা।

নির্দিষ্ট ভাষার মানুষ হয়ে আমরা একেবারে সাধারণ নগরবাসীর মতোই আচরণ করি- এর বদলে সামিল হই, আচার মেনে চলি, পরিবর্তন উদযাপন করি এমনকি মাঝে মাঝে বদল ঘটাতে ভোটাভুটিতেও অংশগ্রহণ করি। কোন শব্দই পুরোপুরি অনুবাদ কিংবা অ-অনুবাদযোগ্য নয়। শব্দের বাস্তব প্রয়োগের সূত্র ধরেই আমাদের ভালো অনুবাদ করা কিংবা হাস্যকর কোন ভুল করা। যেসব শব্দ আমাদের বিভ্রান্ত করে অনেকসময় সেগুলো আসলেই জটিল, মাঝে মাঝে বেশ সহজও। স্ট্রবেরীর মৌসুমে সেটা পাতে পেতে ঠিকঠাক শব্দ জানা আবশ্যক, নয়তো ভুল করে চাওয়া মটরশুটিই খেতে হবে হাসিমুখে।

সোর্চ: বিডিআর্টস২৪.কম

2 Comments

  • Banglatranslate July 18, 2023 at 5:43 am
    Reply

    নির্দিষ্ট ভাষার মানুষ হয়ে আমরা একেবারে সাধারণ নগরবাসীর মতোই আচরণ করি- এর বদলে সামিল হই, আচার মেনে চলি, পরিবর্তন উদযাপন করি এমনকি মাঝে মাঝে বদল ঘটাতে ভোটাভুটিতেও অংশগ্রহণ করি। কোন শব্দই পুরোপুরি অনুবাদ কিংবা অ-অনুবাদযোগ্য নয়। শব্দের বাস্তব প্রয়োগের সূত্র ধরেই আমাদের ভালো অনুবাদ করা কিংবা হাস্যকর কোন ভুল করা। যেসব শব্দ আমাদের বিভ্রান্ত করে অনেকসময় সেগুলো আসলেই জটিল, মাঝে মাঝে বেশ সহজও। স্ট্রবেরীর মৌসুমে সেটা পাতে পেতে ঠিকঠাক শব্দ জানা আবশ্যক, নয়তো ভুল করে চাওয়া মটরশুটিই খেতে হবে হাসিমুখে।

    • Banglatranslate July 18, 2023 at 6:49 am
      Reply

      হয়তো এটাই সত্যি যে আমরা যেমনটা ভাবি কবিতা আসলে ততটা কাব্যময় নয়, যেমনভাবে দর্শনের যে কাব্যভাব সেটা দার্শনিকের ভাবনার চাইতেও অনেক বড়। কবিতার মধ্যে শব্দের জাদুর পাশাপাশি থাকে জ্ঞানের আধার আর তাই ইংরেজী আর পোলিশ ভাষায় সিম্বোর্সকা যতই আলাদা হোন না কেন, শব্দচয়নের মোহময়তা ছাড়াও সৎ পরামর্শের জন্য তাঁর দ্বারস্থ হই আমরা।

Leave a Comment